মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে কালী প্রদীপের স্বপ্নযাত্রা
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
বিল গেটস কিংবা কার্লোস স্লিম হেলুর মতো বিশ্বের বড় বড় ধনীদের কথা আমরা সবাইই জানি। কিন্তু নিজ দেশের ধনী ব্যক্তিদের নাম আমরা অনেকেই জানি না। কিন্তু আমাদের এই ছোট্ট উন্নয়নশীল দেশেও এমন্সব ধনী ব্যক্তি রয়েছেন যারা সম্পদের পরিমাণে যে কোন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ধনী ব্যক্তিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। তেমনি একজন মানুষের নাম সিলেটের ডাঃ কালী প্রদীপ চৌধুরী। নিজ পরিশ্রম ও যোগ্যতার বলে তিনি এখন বিশ্বের সেরা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের একজন। যিনি নির্মাণ করতে যাচ্ছেন দেশের দ্বিতীয় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্বের প্রায় ৮টি দেশে ডাঃ কালী প্রদীপ চৌধুরীর রয়েছে ২৫ ধরণের ব্যবসা। ক্যালিফোর্নিয়ায় আছে সাড়ে ৩কি.মি. আয়তনের বিশাল বাড়ি। ভারতে আছে ১৬টি চা বাগান, যার মধ্যে আছে ৫০০০০ একরের আয়তন বিশিষ্ট চা বাগান। ইউক্রেনে আছে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে আছে ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট ২৬টি বিশ্বমানের মেডিকেল কলেজ। এর বাইরে আছে বিশ্বের মোড়লদের সাথে সখ্যতা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সাবেক প্রেসিডেন্ট রিগ্যান, জর্জ বুশ, সিনিয়র বুশ, হিলারি ক্লিনটন এরা তাঁর নিয়মিত ডিনার সঙ্গী। তাঁর সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫কি.মি দীর্ঘ সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।
তবে বিষয়টা হলো, শুধু টাকাপয়সা থাকলেই কাউকে নিয়ে মাতামাতি করার কিছু নেই। তার অর্জিত টাকাপয়সা তিনি জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করেন কীনা সেটাই মুখ্য বিষয়। আর কালী প্রদীপ এদিক থেকেও স্থাপন করেছেন বিরল দৃষ্টান্ত।
সিলেটের ঢাকা দক্ষিণ এলাকার দত্তরাইল গ্রামে জন্ম নেওয়া জমিদার কালীপদ দত্ত চৌধুরীর সন্তান কালী প্রদীপের ছেলেবেলা কেটেছে নিজ এলাকাতেই। বিশ্বসেরা ব্যক্তিদের একজন তিনি। কিন্তু ভুলে যাননি স্বদেশকে। দেশে ছুটে এসেছেন অনেক স্বপ্ন নিয়ে। বাংলাদেশের এক ঐতিহ্যবাহী এলাকা সিলেটের ঢাকা দক্ষিণে। খোদ তার নিজ গ্রামেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ৩টি কলেজ, যার একটিতে আছে ৫টি বিষয়ে অনার্স কোর্স।
কিন্তুু ডাঃ কালী প্রদীপের স্বপ্ন আরো বিস্তৃত। তিনি দেখলেন, সারাদেশে আছে একটি মাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সিদ্ধান্ত নিলেন নিজ গ্রামে পৈতৃক সম্পত্তির ৩৫ একর জায়গা জুড়ে নির্মাণ করবেন বিশ্বমানের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু প্রথমদিকে তার উদ্যোগে জাতীয় এবং স্থানীয়ভাবে বাধা তৈরী হয়েছিল। জাতীয় শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা চাইছিলেন এটি সিলেটের ঢাকাদক্ষিণে না হয়ে রাজধানী ঢাকায় হোক। আর স্থানীয় ভূমিখেকোরা নিজেদের স্বার্থ বিনষ্ট হবে ভেবে এর বিরোধিতা করেছিলেন।
কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশে অর্থমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর সহোদর সাবেক রাষ্ট্রদূত একেএম আব্দুল মোমেন দায়িত্ব নিয়েছেন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি তৈরির। যেকোন মূল্যে জমিদার বাড়ির সম্পত্তির উপরই নির্মাণ হবে বিশ্বমানের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। দেশ-বিদেশ থেকে রোগীরা চিকিৎসার জন্য ছুটে আসবেন এখানে। প্রপিতামহ কালিকাপ্রসন্ন দত্ত চৌধুরীর স্বপ্ন বড় পরিসরে বাস্তবায়িত হবে এই স্বপ্ন দেখেন ডাঃ কালী প্রদীপ দত্ত ও সহোদরা তৃঞ্চা দত্ত।
এদিকে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম টাওয়ার নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন ডাঃ কালী প্রদীপ । রাজধানী ঢাকার পূর্বাচল এলাকায় ১৪২ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করছেন ডাঃ কালী প্রদীপ । ডাঃ কালী প্রদীপ দত্ত চৌধুরী টাওয়ার, দত্তরাইল (কেপিসি টাওয়ার) নামের এই টাওয়ারটি শ্রীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার কথা। এর পরই শুরু হবে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। মেডিকেল বাস্তবায়ন সহ অন্যান্য কাজে এলাকার সকলের সহযোগিতা চান সিলেটের এককালের দাপুটে জমিদার পরিবারের সন্তান ডাঃ কালী প্রদীপ চৌধুরী।
গত ১০ই জুন শুক্রবার ঢাকাদক্ষিণে জমিদার বাড়িতে আয়োজিত অনুষ্টানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত অবৈধভাবে দখলকৃত সকল ভূমি মুক্ত করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় যেকোনভাবে তা দখলমুক্ত করা হবে বলে তিনি হুশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, ঢাকাদক্ষিণের দত্ত চৌধুরী পরিবারের অবৈধভাবে গ্রাস করা সকল সম্পত্তি অবিলম্বে ছেড়ে দিতে হবে, নইলে সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে l
এভাবেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে ডাঃ কালী প্রদীপের কর্মযজ্ঞ। তিনি সফল হলে গোটা দেশই লাভবান হবে সে কথা বলাই বাহুল্য।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া